ঢাকা, শনিবার, ১৪ নভেম্বর-২০২০ : জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন ১২ নভেম্বর কারা বাসে আগুন দিয়েছে তা বের করতে হবে। সরকার বিএনপিকে দোষ দিচ্ছে আবার বিএনপি বলছে তারা দায়ী নয়। আগুন সন্ত্রাস মেনে নেয়া যায়না। তিনি বলেন, কোন মতেই দেশকে অস্থিতিশীল করতে দেয়া যাবেনা। আগুন সন্ত্রাস প্রতিরোধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে আহ্বান জানান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান-এর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় মৎস্যজীবী পার্টির পরিচিতি ও মতবিনিময় সভায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।
এ সময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, আস্থা ও নিরাপত্তাহীনতার মাঝে মানুষের কাছে আস্থার রাজনৈতিক শক্তি হচ্ছে জাতীয় পার্টি।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ চায় জাতীয় পার্টি আরো শক্তিশালী হয়ে মানুষের কল্যাণে দায়িত্ব গ্রহণ করুক। দেশের মানুষ অত্যান্ত আগ্রহ নিয়ে জাতীয় পার্টির দিকে তাকিয়ে আছে। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রথম বা দ্বিতীয় শক্তি হিসেবে টিকে থাকতে চায়। জাতীয় পার্টি মানুষের প্রত্যাশা পূরণের সংগ্রাম এগিয়ে নিতে রাজনীতি করছে।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের প্রধান হিসেবে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ অনেক সংস্কারমূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করেছেন। তিনি বলেন, ঊপনিবেশিক প্রথা ভেঙে উপজেলা পদ্ধতি প্রবর্তণ করেছেন। ঔষুধ নীতি করে বাংলাদেশের ঔষুধ শিল্পকে রফতানিমুখী শিল্পে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি বলেন, এখন সবাই অনুধাবন করছেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর স্বাস্থ্যনীতি ও শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন জরুরী হয়ে পড়েছে। এসময় জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, বিরোধীতার জন্য বিরোধীতা করে এরশাদের সংস্কারমূলক কর্মকান্ডকে বিতর্কিত করতেই তাকে স্বৈরাচার বলা হয়েছে। দেশের মানুষ এখন উপলব্ধি করতে শুরু করেছেন, এরশাদই প্রকৃত দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন।
জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ৯০ সালের পরে তিন জোটের রুপরেখা অনুযায়ী সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হয়েছে। কিন্তু সংবিধানে ৭০ ধারা সংযোজনের মাধ্যমে ৯০ সালের পর থেকে দেশে পরোক্ষভাবে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৭০ ধারার কারণে সংসদের কাছে সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়না। আর জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে গণতন্ত্র বা সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়না। বলেন, জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব হয়না। ফলে জবাবদিহিতার অভাবে দেশে দুর্নীতি ও টেন্ডারবাজী স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ। ভেদাভেদ ভুলে জাতীয় পার্টি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ-এর আদর্শ বাস্তবায়ন করতে এগিয়ে যাবে।
এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, পল্লীবন্ধু এরশাদ ঘোষণা করেছিলেন, জল যার জলা তার। প্রান্তিক জেলেদের জীবন মান উন্নয়নে পল্লীবন্ধু অসাধারণ উদ্যোগ বাস্তবায়িত করেছিলেন। তিনি বলেন, এখন গ্রামাঞ্চলের ছোট্ট ছোট্ট জলাশয়ও ক্ষমতাসীনদের দখলে। আবার গ্রাম্য বাজারে মাছ বিক্রি করতেও ক্ষমতাসিনদের টোল দিতে হয়, এটা সভ্য সমাজে বেমানান। তিনি বলেন, দেশ থেকে ১ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। কিন্তু সরকার পাচার হওয়া টাকা দেশে ফেরত আনতে উদ্যোগ নিচ্ছেনা। বলেন, অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের স্পৃহা কাজ করলে, গণমানুষের জন্য ভালোবাসা তৈরী হয়না। তিনি উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, কোন দেশে ৮ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে পারেনা। হাট-বাজার, সিনেমা হল সহ সকল প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে অটোপাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বলেন, দেশের মানুষ ভোটের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। দেশের মানুষ আর ভোট কেন্দ্রে যেতে চায়না, গণতন্ত্রের স্বার্থেই মানুষকে ভোটের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে হবে।
জাতীয় মৎস্যজীবী পার্টির সভাপতি আজাহার সরকার-এর সভাপতিত্বে এবং মীর সামসুল আলম লিপটন-এর পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় আরো বক্তৃতা করেন-প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব (রংপুর বিভাগ) ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব (চট্টগ্রাম বিভাগ) এ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, এমরান হোসেন মিয়া, উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ড. নুরুল আজহার শামীম, সরদার শাহজাহান, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান এমপি, মোস্তফা আল মাহমুদ, হুসেইন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, এ্যাড. আব্দুল হামিদ ভাসানী, মোঃ বেলাল হোসেন। উপস্থিত ছিলেন- সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কর্ণেল (অব.) সাব্বির আহমেদ, এনাম জয়নাল আবেদিন, মাখন সরকার, হুমায়ুন খান, সুলতান মাহমুদ, এম.এ. রাজ্জাক খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক ভূঁইয়া, মিজানুর রহমান মিরু, যুগ্ম সম্পাদক- মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, এস.এম. রহমান পারভেজ, কেন্দ্রীয় নেতা- রিতু নূর, সোলায়মান সামি, মোতাহার হোসেন সিদ্দিকী, ফারুক শেঠ, গোলাম মোস্তফা, মনিরুজ্জামান টিটু, জিয়াউর রহমান বিপুল, আলমগীর হোসেন, সরোয়ার হোসেন, মোঃ আনোয়ার হোসেন, হুমায়ুন কবির মুন্সি, মোঃ টুলু, আব্দুল কুদ্দুস মানিক, কাজী শাহীন, মোঃ পেয়ারুল হক হিমেল, তরুন পার্টির সদস্য সচিব মোড়ল জিয়াউর রহমান, জাতীয় ছাত্র সমাজ-এর সাধারণ সম্পাদক আল মামুন। মৎস্যজীবী নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জাতীয় মৎস্যজীবী পার্টির সহ-সভাপতি পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরীর, মোঃ আবু জাফর, রিপন মাহমুদ, জিল্লুর রহমান বিনু, আলমগীর হোসেন, বোরহান উদ্দিন মাস্টার, ডা. শাহ আলম, মোঃ আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
Leave a Reply